পৃথিবীতে মানুষ মহান আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি। বলা হয়ে থাকে, মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল আর তাই তিনি ক্ষমাশীল ভালোবাসেন। মানুষকে সমাজে চলতে গিয়ে নানান প্রকৃতির মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়। মানুষের স্বাভাবিক ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে না দেখলে জীবন যাপন করা কঠিন হয়ে যায়। আর ক্ষমাশীল আচরণ মানুষকে মহৎ করে তোলে এবং সমাজ ও পরিবারে জান্নাতি পরিবেশ তৈরি করে। আল্লাহর পক্ষ থেকেও দুনিয়া-আখেরাতে ক্ষমাশীলদের জন্য রয়েছে বিশেষ পুরষ্কার।

সম্মান বৃদ্ধি হয়: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সদকা করলে সম্পদ কমে না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা সমুন্নত করে দেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৪৮৬)। ক্ষমার পুরষ্কার আল্লাহ নিজে দেবেন: আল্লাহ বলেন, ‘আর মন্দের প্রতিফল তো অনুরূপ মন্দই। যে ক্ষমা করে ও আপস করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে; নিশ্চয়ই তিনি অত্যাচারীদের পছন্দ করেন না।’

(সুরা শুরা, আয়াত : ৪০)। ক্ষমাশীল আচরণ শত্রুকে বন্ধুতে পরিণত করে: আল্লাহ বলেন, ‘আর ভালো ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দ প্রতিহত করুন তা দ্বারা যা উত্কৃষ্ট; ফলে আপনার ও যার মধ্যে শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতো।’ (সুরা ফুসসিলাত, আয়াত : ৩৪)। ক্ষমাশীলদের আল্লাহও ক্ষমা করে দেন: মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন, অভাবগ্রস্তকে ও আল্লাহর রাস্তায় হিজরতকারীদের কিছুই দেবে না; তারা যেন ওদের ক্ষমা করে এবং ওদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন।’

(সুরা নুর, আয়াত : ২২)। ক্ষমার বিনিময়ে আল্লাহর ভালোবাসা ও জান্নাত লাভ: আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা তীব্রগতিতে চল নিজেদের রবের ক্ষমার দিকে এবং সেই জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি আসমান ও জমিনের সমান, যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্য। যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুত আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৩, ১৩৪)